কি ভাবে খুব সহজে 'ট্যাংরা মাছের পাতলা ঝোল' রান্না করবেন?
একটি ছোট্ট টিপস :-
এলার্জিতে কয়েকটি ঘরোয়া বা হারবাল চিকিৎসা -
এখানে এলার্জি ব্যপারে জানতে হলে প্রথমে আমাদের জানতে হবে এলার্জি কি। এলার্জি হলো এটি একটি অ্যালার্জিজনিত রোগ নামে পরিচিত। সাধারণত পরিবেশে ক্ষতিকারক পদার্থের জন্য ইমিউন সিস্টেমের অতি সংবেদনশীলতার কারণে সৃষ্টি বিভিন্ন অবস্থা।এই রোগ গুলির মধ্যে রয়েছে যেমন জ্বর, খাদ্যের এলার্জি, এলার্জিজনিত হাঁপানি,এবং অ্যানাফিল্যাক্সিস, ইত্যাদি।আর লক্ষন গুলির মধ্যে রয়েছে যেমন চোখ লাল হওয়া, চুলকানি, হাঁচি, ফুসকুড়ি,কাশি,নাক দিয়ে জল পড়া, শ্বাসকষ্ট বা ফুলে যাওয়া অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে, ইত্যাদি। তাহলে চলুন একটু বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক। এলার্জি সাধারণত কোনো একটি বিশেষ খাবার থেকে হতে পারে।আর আলাদা মানুষের ক্ষেত্রে সেটি আলাদা হয়।মানে কারো ডিমে এলার্জি থাকলে অন্য মানুষের ক্ষেত্রে তা নাও হতে পারে। আমাদের কাছে এলার্জির সাধারণ ধারণা হলো কোনো বিশেষ খাবার খেলে আমাদের গায়ে চাকা চাকা দাগ দেখা যায়, অথবা চুলকানি হয়, অথবা অনবরত হাঁচি কাশি দেখা যায় এবং তা চলে বেশ অনেকটা সময় ধরে।আর ধুলো,বালি, ফুলের পরাগ থেকে ও এলার্জির লক্ষণ দেখা যেতে পারে।এই এলার্জির কারণকে হাইপার সেনসিটিভিটি বলা হয়। আমাদের দেহে ইমিউনিটি গড়ে তুলতে ইমিউনোগ্লোবিউলিন এর ভূমিকা অপরিসীম।এই ইমিউনো গ্লোবিউলিন আমাদের অর্জিত অনাক্রম্যতা। আমাদের মোট পাঁচ ধরনের ইমিউনোগ্লোবিউলিন আমাদের শরীরে উপস্থিত।আর আমাদের অনেকেরই শরীরে বিশেষ কিছু খাদ্য বস্তুর ক্ষেত্রে এই ইমিউনোগ্লোবিউলিনের বিক্রিয়াতে আমাদের শরীরে প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। বিভিন্ন এলার্জির উপসর্গের উপর ভিত্তি করে তাদের নামকরণ আলাদা হয়।১. এলার্জিজনিত সর্দি :- এই প্রকার এলার্জিকে বৈজ্ঞানিক ভাষাতে বলা হয় এলার্জিক রাইনাইটিস।এর প্রধান উপসর্গ গুলি হলো -
চোখ লাল হয়ে যাওয়া, চোখ দিয়ে জল পড়া,অনবরত হাঁচি,নাক দিয়ে জল পড়া,নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া ইত্যাদি।
এই এলার্জিক রাইনাইটিস আবার দুই প্রকারের - সিজিলান এলার্জিক রাইনাইটিস এবং দ্বিতীয়টি পেরিনিয়াল এলার্জিক রাইনাইটিস।
সিজিলান এলার্জিক রাইনাইটিস - যা বছরের একটি নির্দিষ্ট সময়ে এলার্জির প্রভাব পরিলক্ষিত হলে সেক্ষেত্রে তাকে বলা হয় সিজিনাল এলার্জিক রাইনাইটিস।
এর উপসর্গ গুলির মধ্যে প্রধানত - চোখ দিয়ে জল পড়া,নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া,নাক দিয়ে জল পড়া ইত্যাদি।
দ্বিতীয়টি পেরিনিয়াল এলার্জিক রাইনাইটিস - এই প্রকার রাইনাইটিসের স্থায়ীত্বকাল বেশি এবং অধিক প্রভাব যুক্ত।এর ও উপসর্গ গুলি কমবেশি সিজিনাল রাইনাইটিসের মতোই।
২. আর্টিকেরিয়া :- আর্টিকেরিয়ার ফলে ত্বকের ওপর লালচে
ভাব দেখা যায়।যার ফলে ত্বকের ওপরের অংশ ফুলে যায়। এবং চুলকানি দেখা যায়। ত্বকের
অতি গভীর স্তরে হলে হাত মুখ ফুলে যেতে পারে।এই রোগ প্রধানত স্বল্পস্থায়ী হয়। কিন্তু
কখনো কখনো এই রোগ দীর্ঘস্থায়ী ও হতে পারে। বৃদ্ধদের ক্ষেত্রে আর্টিকেরিয়া দীর্ঘস্থায়ী
হয়। শিশুদের ক্ষেত্রে এই রোগ স্বল্পস্থায়ী।
৩. এলার্জিক কনটাক্ট ডারমাটাইটিস :- এটি চামড়ার কোনো
কোনো অংশ খোসা উঠে ছোট ছোট দানার মতো উপাদানের উদ্ভব হয়। কোনো প্রকার এলার্জেনের সংস্পর্শে
ত্বক এলে এই প্রকার এলার্জির প্রভাব দেখা যায়।এই রোগের ক্ষেত্রে চামড়া উঠে গিয়ে
খসখসে হয়ে যায়। এছাড়া ও ত্বক রুক্ষ হয়ে যায়।এই রোগের ফলে ত্বকে ফোসকা দেখা যায়।
৪. হাঁপানি বা এজম্যা :- এই রোগের ক্ষেত্রে ঘনঘন কাশি,
হাঁচি, শ্বাস নেওয়ার সময় বাঁশির মতো শব্দ হত্তয়া। বাচ্চাদের ক্ষেত্রে ঠাণ্ডা লাগলে
এই প্রকার এজম্যা বা হাঁপানির ভাব দেখা যায়।
৫. এলার্জিক কনজাংটিভাইটিস :- এলার্জিক কনজাংটিভাইটিস
ফলে চোখ চুলকানি, চোখ লাল হয়ে যাওয়া ইত্যাদি লক্ষণ দেখা যায়।
৬. খাদ্য থেকে এলার্জি :- এর ফলে ডায়েরিয়া, বমি বমি
ভাব এই সব রোগের উপসর্গ দেখা যায়।
৭. সাধারণ এলার্জিক উৎপাদক সমূহ :- ফুলের রেণু, অতিরিক্ত
ঠাণ্ডা,ধুলো, বালি, ময়লা, পোকামাকড়ের কামড়, ইত্যাদি এই প্রকারের এলার্জির উদ্ভব
হয়।
৮. পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থেকে উদ্ভূত এলার্জি :- এই প্রকার
এলার্জি জীবননাশী এক্ষেত্রে রোগীর হাঁচি,কাশির পাশাপাশি, রোগীর রক্তচাপ কমে যায়, অনেক
ক্ষেত্রে রোগী অনেক সময় শকে চলে যায়। আগে ধারণা ছিল এলার্জি একবার হলে তা আর সেরে
ওঠে না। কিন্তু ধীরে ধীরে এই ধরনের ধারণা বদলাচ্ছে বা বদলে গেছে। এখন ইমিউনোথেরাপির
মাধ্যমে এখন এলার্জির নিরাময় সম্ভব। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এখন এলার্জির চিকিৎসার
ক্ষেত্রে ভ্যাকসিনকে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। বিশেষ এলার্জির ক্ষেত্রে বিশেষ রোগের ক্ষেত্রে
চিকিৎসার ধরনের ও পরিবর্তন হয়েছে বা হয়।
এই আমাদের ঘরের রোজকারের জীবনে আমরা যা ব্যবহার করি তা
থেকে ও আমরা এলার্জির ওষুধ পেতে পারি। কারণ সবার ক্ষেত্রে ইমিউনোথেরাপির সুযোগ নেওয়া
সম্ভব নয় অথবা সম্ভব না। তাই ভেষজ উপায়ে কিছু টোটকা আমরা খুঁজে নিতে পারি। তাই আপনাদের
জন্য দেওয়া হলো কিছু ভেষজ পদ্ধতি যার দ্বারা অনেক ক্ষানি এলার্জির দূর করা সম্ভব।
তাহলে চলুন দেখে নেওয়া যাক।
১. নিমপাতা :- এলার্জির ক্ষেত্রে অব্যর্থ ওষুধের নাম
নিম পাতা। হ্যাঁ নিম পাতার দ্বারা এলার্জি নির্মূল সম্ভব। নিমপাতা রোদে শুকিয়ে, তাকে
গুঁড়ো করে রাখতে হবে।এক চামচ নিম পাতার তিনভাগের এক ভাগের সাথে,এক চামচ ভূষি মিশিয়ে
তাকে সকালে জলে ভিজিয়ে রাখতে হবে। তারপর ৩০ থেকে ৪০ মিনিট কেটে গেলে চামচ দিয়ে নেড়ে
দিনে তিনবার খেতে হবে। সকালে খালি পেটে,আর দুপুরে ভরা পেটে, এবং রাতে শোয়ার আগে খেতে
হবে। এইভাবে ২১ দিন ধরে এই সেবনের ফলে উপকার মিলবে।
২. গ্ৰীন টি :- এতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট
থাকায় এটি এলার্জি রোধে বিশেষ ভূমিকা নেয়।
৩. আদা এবং আদা চা :- বমি ভাব, ডায়েরিয়া,মাথা
ঘোরা ইত্যাদি সমস্যাতে আদা খুবই জরুরি উপাদান।এতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট
থাকে। কিছু আদা কুচি গরম জলে ফুটিয়ে নিয়ে তার সাথে ও কিছুটা আদার রস এবং মধু মিশিয়ে
খেয়ে নিতে হবে।
৪. শশা এবং গাজর :- শরীরে কোনো খাবার খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে
এলার্জি দেখা দিলে শশা এবং গাজরের রস একসাথে মিশিয়ে খেলে এলার্জির প্রভাব দ্রুত কমবে।
শশা ও গাজরের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি এলার্জিক উপাদান থাকে।
৫. রসুন :- রসুনে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট
থাকে।যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। এক টুকরো রসুন খেলে সংক্রমণ জাতীয় যে কোন
ও রোগ থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে।
৬. কমলা লেবু :- অনেক সময় শরীরে পাকস্থলীতে প্রোটিনের
পরিমাণ বেড়ে গেলে শরীরে এলার্জি হতে পারে। সেক্ষেত্রে অ্যাসিড জাতীয় খাদ্য অর্থাৎ
ভিটামিন সি জাতীয় খাবার খেলে এলার্জির প্রভাব কমবে। মধু,জল, এবং লেবুর রস মিশিয়ে
খেলে দেহ অনেক ক্ষানি এলার্জি মুক্ত করে।
৭. কলা :- কলা খুবই দরকারি একটি খাদ্য।দেহে লাল ছোপ দেখা
দিলে কলা খুবই কাজে দেয়।কলা দেহের মেটাবোলিজম বৃদ্ধি করে। তাই কলা এমন একটি খাবার
বা ফল যা খেলে এলার্জির উপদ্রব কমবে।এতে এলার্জি না কমলে ও, এলার্জি দেখা দিলে তা কমাতে
সাহায্য করে তাছাড়া ও বিভিন্ন ধরনের ফল সেবনের মাধ্যমে ও বিভিন্ন এলার্জির উপদ্রব
কমবে। প্রকৃতির কাছ থেকে পাওয়া ফলমূলের গুনাগুনই আলাদা।
তাহলে চলুন আর কথা না বাড়িয়ে আজকের রেসিপিটি 'ট্যাংরা
মাছের পাতলা ঝোল' দেখে নেওয়া যাক।
ডিসক্লেইমার :- ওপরের উল্লেখিত দাবি, পদ্ধতিতে পরামর্শ
স্বরূপ। প্রয়োজনীয় চিকিৎসা পদ্ধতি আর ডায়েট ফলো করার জন্য অবশ্যই বিশেষজ্ঞ অথবা
চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন অথবা কথা বলুন, সেই নিয়ম মতো মেনে চলুন।
যা যা প্রয়োজন অর্থাৎ উপকরণ :-
১. ট্যাংরা মাছ ৩০০ থেকে ৪০০ গ্ৰাম
২. কাঁচকলা ১ টি
৩. আলু ৪ টি
৪. পটল ৪ টি
৫. ছোট বেগুন ১ টি
৬. কাঁচা পেঁপে ৫০ থেকে ১০০ গ্ৰাম
৭. এছাড়া শীতের কালের সময়ে এতে ফুলকপি, কড়াইশুঁটি, বাঁধাকপি, প্রভৃতি সবজি দিতে পারেন।
৮. ধনে দেড় চামচ
৯. জিরে আধ চামচ
১০. গোলমরিচ আধ চামচ
১১. আদা ১ ইঞ্চির মতো (এবারে ধনে,জিরে, গোলমরিচ, আদা সব একসঙ্গে মিশিয়ে মিহি করে বেটে ফেলুন)
১২. হলুদ গুঁড়ো আধ চামচ
১৩. আবার জিরে লাগবে চার ভাগের এক ভাগ চামচ
১৪. চিনি আধ চামচ
১৫. শুকনো লঙ্কা ২ টি
১৬. নুন পরিমাণমতো
১৭. তেল ২৫ চামচের মতো অর্থাৎ প্রয়োজনমতো
১৮. মাছে মাখানোর জন্য আলাদা করে নুন ১ চামচ, হলুদ আধ
চামচ
কি ভাবে রান্না করবেন অর্থাৎ প্রনালীঃ -
প্রথম ধাপ :- প্রথমে মাছ গুলো কেটে কুটে পরিস্কার করে
নিন, তারপর সেই মাছে হলুদ ও নুন মাখিয়ে রাখুন। এরপর আলু, পটল প্রভৃতি সবজি লম্বা লম্বা
করে কেটে অল্প ভেজে জল হলুদ দিয়ে সেদ্ধ করুন। এরপর একটি কড়াই নিন, সেই কড়াইতে ৫
থেকে ৬ চামচ (পরিমাণমতো) তেল দিয়ে মাছ অল্প ভেজে রাখুন। এবারে মাছ ভাজা তেল যদি থেকে
যায় তাহলে সেটি ফেলে দিয়ে কড়াই ভালো করে পরিষ্কার করে নিন। এরপর বাকি তেল কড়াইতে
দিয়ে ভালো করে গরম করুন, তেল গরম হলে তাতে জিরে, লঙ্কা, তেজপাতা ফোড়ন দিন,এবারে ভাজা
ভাজা হয়ে এলে সেদ্ধ তরকারি গুলো জল সমেত ঢেলে দিয়ে বাটা মশলা সামান্য জলে গুলে ঢেলে
তাতে মাছ, নুন ও চিনি দিয়ে নাড়তে থাকুন মাঝে মাঝে। এরপর ফুটে উঠলে ঝোলের পরিমাণ কম
মনে হলে আন্দাজ মতো জল দিন। এরপর ভালো করে ফোটান। দেখুন মাছ সেদ্ধ হয়ে এলে নামান।
এবারে গরম গরম ভাতের সঙ্গে পরিবেশন করুন।ব্যস এই ভাবেই তৈরি করে ফেলুন বাড়িতেই 'ট্যাংরা
মাছের পাতলা ঝোল ' ।