মাছের মাথা দিয়ে মুগের ডাল কি ভাবে রান্না করবেন ?মাছের মাথা দিয়ে মুগের ডাল অনুষ্ঠান বাড়ির মতো |

একটি ছোট্ট টিপস:-

আজকে জানবো মিক্সি ও গ্ৰাইন্ডারের ব্যবহার :- আমাদের রান্না ঘরের সবচেয়ে প্রিয় একটি জিনিস হলো মিক্সি।এর মাধ্যমে আমাদের খুব কম সময়ে বাটনা পিষে ফেলতে পারি যা আমাদের খুব সাহায্যে করে।এর আর একটি গুন হলো অল্প সময়ে,কম পরিশ্রমে এই সরঞ্জামটি থেকে একাধিক কাজ পাওয়া যায়।এর আর ও কতকগুলি সরঞ্জাম আছে,যেমন -গ্ৰাইন্ডার,হুইপার,জুমার ইত্যাদি। এগুলির সাহায্যে আপনি খুব সহজেই ডাল, চিনি, মশলা প্রভৃতি পিষতে পারেন, আর ফলের রস বার করতে পারেন।এই সব গুন থাকার জন্যেই মিক্সির চাহিদা খুব বেশি বেড়ে গেছে।

এই মিক্সি সাধারণত দুটি অংশ। একটি হলো (১) নিচের অংশ (Lower part) এবং (২) ওপরের অংশ (Upper part)।
১। নিচের অংশ( Lower part)- এই অংশে ইলেকট্রিক মোটর আর রেগুলেটর ফিট করা থাকে।
২। ওপরের অংশ (Upper part)-এতে সহ উপকরণ বা আ্যটাচমেন্ট লাগানো থাকে। যেমন -যদি ডাল পিষতে চান, তাহলে গ্ৰাইন্ডার লাগিয়ে নেবেন।যদি ফলের রস বার করতে চান, তাহলে মিক্সার লাগাবেন।মিক্সির ওপরে ঢাকনা লাগানো একটি জার থাকে।এই জারটির ঠিক মাঝখানে একটি ছিদ্র থাকে।এর মাথায় আবার ছিপি আটা থাকে।তার নিচে থাকে ব্লেড।ব্লেড জারে রক্ষিত বস্তুকে পিষে ফেলে অথবা ফেটিয়ে ফেলে।এর নিচে থাকে ইলেকট্রিক মোটরের সঙ্গে সম্পর্ক যুক্ত কাপলিং,তার নিচে মোটর।

মোটরের ওপরে একটি খোলা লাগানো থাকে রেগুলেটর।মোটরে স্টার্ট নেবার ও গতি বাড়ানো কমানোর জন্য রেগুলেটর ব্যবহার হয়।মিক্সির ব্লেডগুলো খাঁটি ইস্পাতের তৈরি অর্থাৎ স্টেনলেস স্টিলের।এই ব্লেড গুলো মিনিটে ৪৫০০ থেকে ১০০০০ বার পর্যন্ত ঘোরার শক্তি রাখে।এই সব ব্লেড যে পেয়ালায় লাগানো থাকে, তাকে বলে গ্ৰাইন্ডার। এতে ডাল, মশলা,চাল ইত্যাদি পেশাই হয়।

মিক্সি আর একটি সহ উপকরণ হলো জার।এতে তরল পদার্থ ফেটানো বা রস নিঙড়ানো হয়।ম্যাঙ্গো অথবা মিল্ক শেক তৈরি করা যায়।এর নাম হলো লিকুইড ডাইজার।এর আবার ব্লেডের আকৃতি কার্যকারিতা অনুযায়ী ভিন্ন। প্রয়োজন মতো যখন যেটা দরকার লাগিয়ে নিতে হয়।
মিক্সি ব্যবহার ও সংরক্ষণ:-

১. মিক্সির মোটর ২ থেকে ৩ মিনিট পর্যন্ত চালিয়ে বন্ধ করে দেবেন।

২. বড় সাইজের মিক্সি হলে ৩ থেকে ৪ মিনিট পর্যন্ত চালাতে পারবেন। তারপর কিছুক্ষণ বন্ধ রেখে আবার উপরিউক্ত সময়সীমা পর্যন্ত চালাবেন। মনে রাখবেন,যে সাধারণ মিক্সির ব্লেডগুলো মিনিটে ১০০০বার ঘোরে, আর বড় মিক্সির ব্লেডগুলো মিনিটে ১৫০০ বার পর্যন্ত বেগে ঘুরতে থাকে।এই পর্যন্ত বেগের জন্য মোটর খুব সহজেই গরম হয়ে যায়।এই জন্যই মাঝে মাঝে বন্ধ করে দিতে হয়, তার ফলে মোটর ঠাণ্ডা থাকে।তা না করলে মোটর খারাপ বা জ্বলে ও যেতে পারে। সেজন্য যত বেশি দামের মিক্সিই হোক না কেন,এক নাগাড়ে চালানো কখনই উচিত নয় বা চালানো ভালো নয়।

৩. তরল পদার্থের ক্ষেত্রে মোটর আর ও ২ থেকে ৩ মিনিট বেশি চালু রাখা যায়। কারণ,এতে মোটরের ওপর চাপ কম পড়ে। কিন্তু মশলা পেষাই বা অন্যান্য কোন পেষাইয়ের সময়, সময়সীমা অবশ্যই মেনে চলবেন।

৪. গ্ৰাইন্ডারে শুধুমাত্র শুকনো জিনিসই পিষবেন। কোন ও রসালো দ্রব্য পিষবেন না।

৫. মিক্সারে শুকনো জিনিস পিষবেন না, শুধুমাত্র রসালো দ্রব্য পিষবেন। মনে রাখবেন, মিক্সার ও গ্ৰাইন্ডারের কাজ ঠিক বিপরীত।

৬. কারেন্ট আগে বন্ধ করে, তারপর মশলা,রস প্রভৃতি বস্তু বার করতে হবে।তা না করলে,যদি কোথাও লিক থাকে তাহলে ইলেকট্রিক শক্ লাগতে পারে।এই গুলো কথা মাথায় রাখবেন।

৭. গ্ৰাইন্ডারে গোটা মশলা দেবেন না। মশলা গুলোকে টুকরো টুকরো করে দেবেন। সবসময় এই ভাবেই কেটে দেবার চেষ্টা করবেন।

৮. গরম জিনিস ভুলেও মিক্সিতে দেবেন না।যদি তা করেন তাহলে মিক্সি খারাপ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

৯. উপরিউক্ত নিয়মগুলি যদি মেনে চলা যায়, তাহলে যে কোন জিনিস দীর্ঘদিন ভালো থাকে।ও দীর্ঘদিন ব্যবহার করতে পারবেন। চলুন আর কথা না বাড়িয়ে আজকের রেসিপিটি মাছের মাথা দিয়ে মুগের ডাল রান্নাটি দেখে নেওয়া যাক।

যা যা প্রয়োজন অর্থাৎ উপকরণ:-

১. মুগের ডাল ২৫০ গ্ৰাম

২. কয়েকটি রসুন

৩. পেঁয়াজ কুচানো ১ টি

৪. আদা বাটা ১ চামচ

৫. জিরে বাটা ১ চামচ

৬. একবারে মিহি করে নারকেল কুচানো ১ চামচ

৭. বড় সাইজের মাছের মাথা ১ টি ( যে কোন মাছের মাথা)

৮. নুন প্রয়োজনমতো

৯. তেল আধ কাপ থেকে এক কাপের মতো

১০. ফোড়নের জন্য শুকনো লঙ্কা পরিমাণমতো

১১. ফোড়নের জন্য গরমমশলা পরিমাণমতো

১২. ফোড়নের জন্য তেজপাতা প্রয়োজনমতো

১৩. ঘি ২ টেবিল চামচ

কি ভাবে রান্না করবেন অর্থাৎ প্রনালীঃ:-

প্রথম ধাপ:- প্রথমে মাছের মুড়ো আগে ভেজে ভেঙ্গে রাখবেন। এরপর মুগডাল ভেজে সেদ্ধ করে নিন। তারপর একটি কড়াই নিন, সেই কড়াইতে তেল দিয়ে তাতে তেজপাতা দেবেন, তারপর রসুন, পেঁয়াজ, নুন ও বাটা মশলা দিন, এবার সেটিকে ভালো ভাবে কষুন।

দ্বিতীয় ধাপ:- এবার মাছের মুড়ো ভাজা গুলো সেই কড়াইতে দিন এবং তাতে সেদ্ধ ডালটি ও দেবেন। পরিমাণমতো জল দিয়ে বেশ করে ফুটান, ফুটে উঠলে জল কিছুটা কমে এলে নামিয়ে নিন, তারপর তার ওপর একটু ঘি দিন। এবার এটি খাওয়ার জন্য প্রস্তুত।এই ভাবেই রান্না করা হয় মাছের মাথা দিয়ে মুগডাল। এইবার গরম গরম ভাতের সঙ্গে পরিবেশন করতে পারেন।