রাজমাকে একটি ভিন্ন পদ্ধতিতে রান্না করার এই পদ।আর এই পদটির নাম হলো রাজমা- ই -মিশরকুমারি।

 

রাজমাকে একটি ভিন্ন পদ্ধতিতে রান্না করার এই পদ।আর এই পদটির নাম হলো রাজমা- -মিশরকুমারি।






রাজমা- ই -মিশরকুমারি





একটি ছোট্ট টিপস :-

ইংরেজিতে আমরা বলে থাকি কিডনি বিনস। আমরা যাকে চিনি রাজমা হিসেবে। পার্শবর্তী দেশ ভারতে এটি বেশ জনপ্রিয় একটি খাবার। সাদা, ক্রিম, কালো, লাল, বেগুনি, স্পটেড, স্ট্রাইপড এবং মোটলড নানা রকম কিডনি বিনস পাওয়া যায়। রাজমা উদ্ভিজ্জ প্রোটিনের একটি প্রধান উৎস এবং এর উপকারিতা অনেক। রাজমার কয়েকটি উপকারিতার সম্পর্কে নিচে দেওয়া হলো






রাজমা




রাজমার কয়েকটি উপকারিতা :-



প্রতি 100 গ্রাম কিডনি বিন অথবা (রাজমা) এর পুষ্টির মূল্য হলো :-

কিডনি বিন প্রোটিনের একটি ভাল উৎস এবং প্রধানত ফাইবার এবং কার্বোহাইড্রেট দ্বারা গঠিত। 100 গ্রাম সিদ্ধ রাজমার মধ্যে 127 ক্যালোরি হয়ে থাকে। উপস্থিত অন্যান্য পুষ্টির মধ্যে রয়েছে 67% জল, 8.7 গ্রাম প্রোটিন, 22.8 গ্রাম কার্বোহাইড্রেট, 0.3 গ্রাম চিনি , 6.4 গ্রাম ফাইবার, 0.5 গ্রাম চর্বি এবং 30.17 গ্রাম ওমেগা। কিডনি বিনের তুলনায় প্রাণিজ প্রোটিনের পুষ্টিগুণ বেশি। অনেক উন্নয়নশীল দেশে প্রোটিনের সাশ্রয়ী বিকল্প হিসেবে কিডনি বিন ব্যবহার করা হয়। এটি প্রোটিন এবং কার্বোহাইড্রেটের একটি সমৃদ্ধ উৎস। কিডনি বিনের প্রধান পুষ্টি উপাদান হল স্টার্চি কার্ব এবং এটি ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য উপযোগী



ইউএসডিএ অনুযায়ী, ১০০ গ্রাম কাঁচা কিডনি বিনে প্রায় ২৪ গ্রাম প্রোটিন রয়েছে। পুষ্টিবিদরা জানিয়েছেন, রাজমা প্রচুর প্রোটিন এবং উচ্চ মানের ফাইবারসমৃদ্ধ। যদি একটি খাবারেই বিভিন্ন অ্যামাইনো অ্যাসিড চান তবে শস্য বাদামের মিশ্রণ খাদ্য হিসেবে উপকারী। তবে একসঙ্গে অনেক না খেয়ে, খেতে হবে কমসম। রাজমায় প্রচুর প্রোটিন ফ্যাসিওলিন থাকে যাতে কারো কারো অ্যালার্জিও দেখা যায়।তাই অ্যালার্জি থাকলে এটি না খাওয়াই উচিত।


রাজমা দ্রবণীয় এবং অদ্রবণীয় ফাইবার সমৃদ্ধ। আমাদের পাচনতন্ত্র সুস্থ রাখতে সাহায্য করে ফাইবার, পাশাপাশি অন্ত্রের সমস্যা কমায়। কিন্তু একবারে বেশি খেয়ে ফেললে গ্যাস বা পেট ফাঁপার মতো সমস্যাও হতে পারে।


রাজমা কার্বোহাইড্রেটে ভরপুর। তবে এই কার্বোহাইড্রেট মোটেই ক্ষতিকারক নয়। এই কার্বোহাইড্রেট হজমে বিলম্ব ঘটায়, যার ফলে রক্তপ্রবাহে শর্করাও নির্গত হয় অল্প। কিডনি বিন কম গ্লাইসেমিক ইনডেক্স সম্পন্ন হওয়ায় এটি ডায়াবেটিসের রোগীর জন্য আদর্শ খাদ্য।



রাজমায় রয়েছে রক্ত তৈরি করে এমন আয়রন ফসফরাস। যা হাড় দাঁত মজবুত রাখতে সাহায্য করে, এর মধ্যে থাকা ভিটামিন কে স্নায়ুতন্ত্রের রক্ষাকারী হিসেবে কাজ করে।


ওজন কমানোর চেষ্টা করলে পাতে রাখুন রাজমা। কারণ এটি উচ্চমানের প্রোটিন এবং ফাইবারে ভরা। অনেকক্ষণ পেট ভরিয়ে রাখে বলে এটি বারে বারে খাওয়ার প্রবণতা কমায়, ফলে ওজনও থাকে নিয়ন্ত্রণে। এছাড়াও এর মধ্যে রয়েছে প্রতিরোধী স্টার্চ। যা ওজন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে।



রাজমা খেতে যেমন সুস্বাদু তেমন উপকারিও। এটি হার্টের জন্য ভালো, ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণ করে, ওজন কমাতে সাহায্য করে, হাড় শক্ত রাখে এমনকী ক্যানসারের সম্ভাবনাও কমায়।


রাজমায় থাকা ফাইবার প্রোটিনের জন্য এটি ওজন কমাতে খুব সাহায্য করে। রাজমার মিনারেল, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম হাড় শক্ত রাখে এবং অস্টিওপোরোসিস হওয়া আটকায়।

তাই এবার থেকে রাজমা খেতে ইচ্ছে করলে নিজেকে আর সেই স্বাদ থেকে বঞ্চিত করবেন না!




কিডনি বিনস (রাজমা) পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া এবং এলার্জি :-

কিডনি বিনস কিছু স্বাস্থ্য ঝুঁকি জড়িত। এগুলি প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট, ভিটামিন এবং ফাইবার সমৃদ্ধ। কোনো ক্ষতিকর ঝুঁকি এড়াতে ডায়েটে উপযুক্ত পরিমাণে কিডনি বিন অন্তর্ভুক্ত করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ভালো ফলাফল এবং সুস্বাস্থ্যের জন্য প্রায় 25 থেকে 38 গ্রাম ফাইবার খাবারে অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে তবে বয়স বাড়ার সাথে সাথে তা কমাতে হবে। প্রচুর পরিমাণে কিডনি বিন খাওয়ার ফলে অন্ত্রের স্বাস্থ্য এবং হজমের সমস্যা হতে পারে।

• 
কিছু সমস্যা যা হতে পারে তার মধ্যে রয়েছে ব্লক হওয়া অন্ত্র, পেটে ব্যথা , ডায়রিয়া এবং গ্যাস। কিডনি বিন থেকে প্রচুর পরিমাণে ফোলেট পাওয়াও ক্ষতিকর কারণ এটি ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। অত্যধিক কিডনি বিনস অঙ্গগুলির ক্ষতি করতে পারে এবং তাই খাদ্যটি ভালভাবে পর্যবেক্ষণ করা গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়াও নিরীক্ষণ করা উচিত খাদ্যের অতিরিক্ত আয়রন যা মস্তিষ্কের ক্ষতি করতে পারে এবং এমনকি হার্ট অ্যাটাকের কারণ হতে পারে। চলুন আর কথা না বাড়িয়ে আজকের এই ভিন্ন পদটি দেখে নেওয়া যাক,আর পদটি হলো রাজমা- -মিশরকুমারি।


ডিসক্লেইমার :- ওপরের উল্লেখিত দাবি, পদ্ধতিতে পরামর্শ স্বরূপ। প্রয়োজনীয় চিকিৎসা পদ্ধতি আর ডায়েট ফলো করার জন্য অবশ্যই বিশেষজ্ঞ অথবা চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন অথবা কথা বলুন, সেই নিয়ম মতো মেনে চলুন।




যা যা প্রয়োজন অর্থাৎ উপকরণ :-

. রাজমা ৪৫০ গ্ৰাম

. পেঁয়াজ টি মাঝারি সাইজের

. ডিম টি

. অলিভ অথবা রিফাইন্ড তেল পরিমাণমতো

. রসুন কোয়া

. পার্সলে পাতা আঁটি

. মরিচ পরিমাণমতো

. মৌসুম্বি লেবু টি

. নুন স্বাদ অনুযায়ী




রাজমা- ই -মিশরকুমারি।





কি ভাবে রান্না করবেন অর্থাৎ প্রনালীঃ -

প্রথম ধাপ:- প্রথমে রাজমা ধুয়ে পরিষ্কার করে নিয়ে, সারারাত জলে ভিজিয়ে রাখুন। এবার একটি বড় পাত্র নিন, সেই পাত্রে পরিমাণমতো জল দিয়ে খুব অল্প আঁচে বসান। এরপর ডিম ছেড়ে দিন ওই জলে। এবারে পেঁয়াজের খোসা যৎসামান্য আলগা করুন যাতে আধফোঁটা ফুলের মতো দেখতে হয়। এরপর পেঁয়াজ গুলি জলে ছেড়ে দিন। তারপর দেড় থেকে দুই ঘন্টা ফোটানোর পর দেখবেন ডিমের খোসা বাদামি রঙ ধারণ করবে। তখন পাত্রটি উনুন থেকে নিয়ে গত রাত্রের ভেজানো বিম বা রাজমা খুব অল্প আঁচে ফোটান, যতক্ষন না নরম হয়ে আসে। কিন্তু খেয়াল রাখবেন যেন গলে না যায় অর্থাৎ গলিয়ে ফেলবেন না। এরপর রাজমা জল থেকে ছেঁকে তুলে একটু ঝরিয়ে নিন এবং সেই অবসরে পার্সলে পাতা কুচিয়ে নিন। এরসঙ্গে রসুনের কোয়া থেঁতো করে নিন।



দ্বিতীয় ধাপ :- এবার একটি বড় সসপ্যান নিন, সেই সসপ্যানে তেল সামান্য গরম করে পার্সলে, রসুন বাটার সঙ্গে রাজমা দিয়ে নাড়তে থাকুন। যতক্ষণ না মাখোমাখো হয়ে ওঠে। এরপর বড়মুখ চ্যাটালো পাত্রে গরম রাজমা ঢালুন। এবারে ডিম ছাড়িয়ে লম্বালম্বি চারফালি করে কেটে পাত্রের চারপাশে সাজিয়ে দিন। প্রতিটি ডিমের ফাঁকে গুঁজে দিন মৌসুম্বি লেবুর কোয়া। এরপর ডিমের ফাঁকে পার্সলে পাতার টুকরো গুঁজে পরিবেশন করুন। এটি একটি ভিন্ন ধরনের রান্না।আর এটি রাজমার ভিন্ন ধরনের পদ।আর এই পদটি হলো ফ্যারাওদের আদরের খাবার এক কথায় এটি একটি ভিন্ন প্রদেশের পদ বা খাবার।

 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.