মাশরুম রাইস রিং । আজকের মজাদার মাশরুমের একটি নতুন রেসিপি।আর মাশরুমের কিছু উপকারিতা ও অপকারিতা সর্ম্পকে নিম্নে দেওয়া হলো।
একটি ছোট্ট টিপস :-
আমদের কাছে 'ব্যাঙের ছাতা' হিসেবে পরিচিত। মাশরুম খেতে চান না অনেকেই, অথচ এটি অত্যন্ত পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ। মাশরুমের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নিন।আর এই পৃথিবীতে এ পর্যন্ত প্রায় চৌদ্দ হাজার প্রজাতির মাশরুমের কথা জানা যায়।
সবচেয়ে দামি মাশরুম কোনটি :-
এর অনন্য স্বাদ ও গন্ধের কারনে বিশ্বে ট্রাফল (Truffle) দামি মাশরুমের খেতাব নিজের দখলে নিতে সক্ষম হয়েছে। এক পাউন্ড ট্রাফল সাধারণত ৩৬০০/= ডলার মুল্যে বিশ্ব বাজারে লেনদেন হয়। দুষ্প্রাপ্যতা ও চোরা কারবারিদের হাতে পড়ে মাঝে মধ্যে ১৫০,০০০/= ডলার মুল্যেও প্রতি পাউন্ড বিক্রি হতে দেখা গেছে।মাশরুম কী :-
মাশরুমের পুষ্টিগুণ :-
পুষ্টিবিদ নিশাত শারমিন বলেন, মাশরুমের কিছু ঔষধি গুণ রয়েছে। এতে প্রচুর প্রোটিন পাওয়া যায়। এতে প্রচুর পরিমাণে আরও আছে অ্যামিনো অ্যাসিড, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, অ্যান্টিবায়োটিক, জিঙ্ক, মিনারেল, সেলেনিয়াম, ফসফরাস, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ভিটামিন ডি এবং ভিটামিন বি।
মাশরুমের কিছু উপকারিতা :-
২. পেশি বাড়াতে যারা বিভিন্ন ধরনের প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার খোঁজেন, তাদের জন্য মাশরুম প্রোটিনের সেরা উৎস হতে পারে।
৩. মাশরুমে পেনিসিলিন থাকে, যা এক রকম অ্যান্টিবায়োটিক যেটি মানবদেহের জন্য অত্যন্ত উপকারী।
৪. মাশরুম ডায়াবেটিস কমাতে সাহায্য করে।
৫. ব্লাড প্রেশার নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়ক মাশরুম।
৬. হৃদযন্ত্র ভালো রাখতে সাহায্য করে।
৭. কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়।
৮. মাশরুমে থাকা পুষ্টি উপাদান ক্যানসার ও টিউমার প্রতিরোধে বেশ সাহায্য করে।
৯. শিশুদের হাড় ও দাঁত ভালো রাখতে সাহায্য করে।
১০. অ্যানিমিয়া দূর করতে ভূমিকা রাখে মাশরুম। সপ্তাহে অন্তত তিন থেকে চার দিন মাশরুম খাদ্যতালিকায় থাকলে বেশ উপকারে আসে এক্ষেত্রে।
১১. মাশরুম শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
মাশরুম কীভাবে খাবেন বা খাওয়া যেতে পারে :-
সালাদ হিসেবে মাশরুম বেশ জনপ্রিয়। এ ছাড়া মাশরুম স্যুপ, ক্রিম মাশরুপ স্যুপ অত্যন্ত জনপ্রিয়। সবজির সঙ্গে মাশরুম দিয়ে বিভিন্ন রেসিপি করে খাওয়া যেতে পারে। নুডুলসের সঙ্গে মাশরুম মিশিয়ে খেতে পারেন, ফ্রাই করেও খেতে পারেন। মাশরুমের পাউডার তৈরি করে নেওয়া যায়, স্যুপে আস্ত মাশরুম ব্যবহার না করে পাউডার আকারে মিশিয়েও খাওয়া যেতে পারে। মাশরুমকে বিভিন্ন ভাবে রান্না করে খাওয়া যেতে পারে।
সতর্কতা ও কারা খাবেন না ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া :-
কখনোই কাঁচা বা অল্প সেদ্ধ করে মাশরুম খাওয়া উচিত নয়। এতে অ্যালার্জিক রিঅ্যাকশন ও হজমের সমস্যা বেড়ে যেতে পারে। মাশরুম বিষাক্ত কি না সেটি নিশ্চিত হয়ে খেতে হবে।
যাদের অ্যালার্জির সমস্যা আছে, বিশেষ করে মাশরুম খাওয়ার কারণে যাদের অ্যালার্জির সমস্যা হয়, তাদের মাশরুম না খাওয়াই ভালো। মাশরুম যেহেতু ছত্রাকজনিত প্রোটিন তাই কিডনি রোগীরা এটি খাবেন না। যাদের হজমে সমস্যা হয়, পেটের নানা রকম সমস্যা থাকে, বার বার ডায়রিয়া হয় তাদের মাশরুম খাওয়া বন্ধ রাখতে হবে।
চলুন আর কথা না বাড়িয়ে আজকের মাশরুম রাইস রিং রেসিপিটি দেখে নেওয়া যাক।আর কেমন লাগলো জানাতে ভুলবেন না।
যা যা প্রয়োজন অর্থাৎ উপকরণ :-
১. বাসমতী চাল ২০০ গ্ৰাম (ধোয়া এবং শুকনো করা)২. জিরা ১ চা -চামচ
৩. পেঁয়াজ ১ টি স্লাইস করা
৪. বড় এলাচের দানা ৪ টি
৫. মরিচ ১ চা -চামচ
৬. চিনি ২০ গ্ৰাম
৭. কারিপাতা ৪ থেকে ৫ টি
৮. মাশরুম ৪০০ থেকে ৪৫০ গ্ৰাম (ধোয়া এবং টুকরো করে কাটা)
৯. ধনে গুঁড়ো আধ চা -চামচ
১০. ছোট ছোট করে কাটা ১টি টম্যাটো
১১. আদা বাটা ১ চা -চামচ
১২. তেল পরিমাণমতো
১৩. নুন প্রয়োজনমতো
কি ভাবে রান্না করবেন অর্থাৎ প্রনালীঃ -
প্রথম ধাপ :- প্রথমে একটি প্রেসার কুকার নিন, সেই প্রেসার কুকারে ২ চা -চামচ তেল দিয়ে ওতে পেঁয়াজ ভেজে নিন। এবারে ওতে চাল গুলি দিন এবং পাঁচ মিনিট থেকে ছয় মিনিট সেদ্ধ করুন। মাঝে মাঝে দেখুন চাল সেদ্ধ হলো কিনা। ওতে আন্দাজ মতো নুন ও সমস্ত মশলা দিন। এবারে একটু বেশি পরিমাণে জল দিয়ে পাঁচ মিনিট রান্না করুন। প্রেসার কুকারে ঢাকা দিয়ে রাখবেন।দ্বিতীয় ধাপ :- এবার একটি পৃথক প্যান নিন, সেই প্যানে ৩ চা -চামচ তেল গরম করে ওর মধ্যে টম্যাটোর শাঁস, হলুদ গুঁড়ো, এবং আদা বাটা দিন। আন্দাজ মতো নুন দিন এবং জলের ছিটে ও দিন (অবশ্যই দিতে হবে), যাতে পুড়ে না যায়।ঘন ঘন নাড়তে থাকুন। এবারে ওতে মাশরুম দিয়ে অল্প সময় রান্না করুন অর্থাৎ দশ মিনিট আঁচে রাখুন। খেয়াল রাখবেন শুকনো যেন না হয়।
তৃতীয় ধাপ :- এবারে চালগুলিকে একটি ওভেন প্রুফ রাইস ট্রেতে রাখুন এবং একটি মেটাল ডিসের মধ্যে গোল করে নিন।মাঝখানটাতে মাশরুম ভরুন। ওভেনে অল্প সময় রেখে তারপর পরিবেশন করা যেতে পারে। কিন্তু মাশরুম পরিবেশনের আগে ভেজে দেবেন। এবারে টম্যাটোর কিছুটা চাকা করে নিন,এই টম্যাটোর চাকা গুলি প্লেটে খুব সুন্দর ভাবে সাজিয়ে পরিবেশন করুন।এই ভাবেই তৈরি করে ফেলুন মাশরুম রাইস রিং রেসিপিটি। কেমন লাগলো জানাতে ভুলবেন না।