বাঙালিদের সবচেয়ে প্রিয় মাছের মধ্যে একটি পারশে মাছ। আজকে দেখাবো এই 'পারশে মাছের রসা'।
একটি ছোট্ট টিপস :-
গ্যাস্ট্রিক নিরাময়ে ঘরোয়া উপায় বা হারবাল চিকিৎসা -
সূচনা :- এখন দেশে বিদেশে ভেষজ হারবালের চাহিদা ব্যাপক। এখন অন্যান্য ওষুধের মতো হারবাল ওষুধ ও বর্তমানে রোগ প্রতিরোধে বেশ কার্যকর।আর এতে কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। মানবদেহের গ্যাস্ট্রিক বা পাকস্থলীর প্রদাহে সাধারণত সঠিক সময়ে খাবার না খাওয়া, এখনকার ভেজালযুক্ত খাবার খাওয়া, অন্যান্য অপুষ্টিকর জাতীয় খাবার খাওয়া এবং অতিরিক্ত ভোজন, এখন গ্যাস্ট্রিকের অন্যতম কারণ।
আবার খাবারে বেশি পরিমাণে মশলা ও তেলের ব্যবহার গ্যাস্ট্রাইটিস সৃষ্টি করে।এর উপসর্গ গুলো হলো -
• গলা ও বুক জ্বালাপোড়া করা
• টক টক ঢেঁকুর ওঠা
• বমি বমি ভাব ও বমি করা
• খাওয়ার আগে বা পরে পেট ব্যথা
• পেট ফাঁপা
• আর টক জাতীয় খাবার অ্যাসিডিটি বৃদ্ধি করে
রোগীর এসব উপসর্গ দেখা দিলে নিয়মিত সঠিক সময়ে খাবার খাওয়া এবং অতিরিক্ত তেল বা চর্বি জাতীয় খাবার পরিহার করা উচিত অর্থাৎ ছেড়ে দেওয়া উচিত। অন্যদিকে দীর্ঘদিন গ্যাস্ট্রাইটিস থাকলে তা ক্রমে পাকস্থলী ও অন্ত্রে ক্ষতের সৃষ্টি করে। সেই ক্ষতের নাম হলো পেপটিক আলসার বা ডিওডেনাল আলসার।
কয়েকটি ভেষজ চিকিৎসা:- গ্যাস্ট্রাইটিস ও গ্যাস্ট্রিক আলসারে আমলকী, যষ্টিমধু, হলুদ, হরীতকী,আদা, ইসবগুল, বহেড়া, শুধু গরম জল,ইত্যাদি খুব কার্যকরী। অন্যদিকে ভেষজ ভাবে এখন বিভিন্ন ধরনের ওষুধ ও গ্যাস্ট্রিকের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হচ্ছে।
এবার কয়েকটি ঘরোয়া টোটকা :-
১. দুই গ্লাস জল একটি হাঁড়িতে নিয়ে চুলায় বসান।এর আগে এক ইঞ্চি পরিমাণ কাঁচা হলুদ জলে দিয়ে দিন।জল অন্তত পাঁচ মিনিট ফুটতে দিন। তারপর নামিয়ে নিন। এবার জল ঠাণ্ডা হয়ে এলে ওই জল হলুদসহ খেয়ে ফেলুন। গ্যাস্ট্রিক দৌড়ে পালাবে।
২. কাঁচা আদা আধ ইঞ্চি পরিমাণে নিন। তারপর অল্প একটু লবণ মাখিয়ে খেয়ে ফেলুন।এই আদা খাওয়ার কিছুক্ষণ পর এক কাপ কুসুম গরম জল খান। এটি করলে গভীর রাতে আর গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হবে না।
৩. এক গ্লাস জলে এক চা চামচ মধু মিশিয়ে রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে পান করুন। কখনোই রাতে পেট বা বুক ব্যথা করবে না।
৪. আর যদি ওপরের সমস্ত পদ্ধতি ঝামেলা মনে হয় তাহলে এটি করুন,শুধুমাত্র এক গ্লাস হালকা উষ্ণ গরম জল খেয়ে নিন, এতেও গ্যাস্ট্রিক থেকে অনেকটা উপকার পাবেন।
গলা জ্বালাপোড়া বা পেটে গ্যাসের সমস্যা থেকে রেহাই পেতে এক ধরনের ওষুধ সেবনে আমাদের কিডনিতে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে বলে সতর্ক করেন গবেষকরা। তাই কৃত্রিম ঔষধের বদলে প্রাকৃতিক ও ভেষজ ঔষধ সেবন করা উচিত।আর ওপরে দেওয়া নিয়ম গুলি মেনে চললে আশা করা যায় আপনার গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা অনেকক্ষানি নিরাময় হয়ে যাবে।আর যদি না হয় তাহলে ডাক্তারের কাছে গিয়ে পরামর্শ নেওয়া অবশ্যই উচিত। চলুন আর কথা না বাড়িয়ে আজকের 'পারশে মাছের রসা' রেসিপিটি জেনে নেওয়া যাক।
যা যা প্রয়োজন অর্থাৎ উপকরণ :-
১. পারশে মাছ ৫ টি
২. গরমমশলা পরিমাণমতো
৩. আদা বাটা ১ চামচ
৪. পেঁয়াজ বাটা ৫ চামচ
৫. রসুন বাটা ৪ থেকে ৫ কোয়া
৬. ভিনিগার ১ চামচ
৭. পাতিলেবুর রস ১ চামচ
৮. সরষের তেল ১০০ গ্ৰাম
৯. চিনি ১ চামচ
১০. কাঁচা লঙ্কা চেরা ৪ টে
১১. হলুদ আধ চামচ
১২. নুন প্রয়োজনমতো
১৩. এলাচ ৩ টে
১৪. লবঙ্গ ৩ টে
১৫. দারচিনি ২ টুকরো
১৬. মাছে মাখানোর জন্যে নুন দেড় চামচ ও হলুদ গুঁড়ো আধ চামচ
কি ভাবে রান্না করবেন অর্থাৎ প্রনালীঃ -
প্রথম ধাপ :- প্রথমে একটি কড়াই নিন, সেই কড়াইতে তেল দিয়ে গরম করুন, তেল গরম হলে তাতে ভিনিগার, লেবুর রস ও চিনি বাদ দিয়ে, বাকি সব মশলা দিয়ে ও সামান্য পরিমাণে জল দিয়ে নাড়তে থাকুন। এরপর মশলা ভাজা ভাজা হয়ে এলে তাতে অল্প পরিমাণে জল ও ভিনিগার ও লেবুর রস দিন। এবারে ফুটতে শুরু করলে তাতে মাছ গুলো ছেড়ে দিন আর মাছ গুলিকে বারে বারে উল্টেপাল্টে দেবেন এরপর তাতে চিনি মেশান। এবারে সেদ্ধ হয়ে এলে নামিয়ে নিন।আর এটি খেয়াল রাখবেন মাছ ও মশলা গা মাখা মাখা হবে।ব্যস এই ভাবেই খুব সহজেই বাড়িতে তৈরি করে ফেলুন এই 'পারশে মাছের রসা'। একবার হলেও বাড়িতে ট্রাই করে দেখতে পারেন, খেতে দারুন লাগবে।