আজকের রেসিপি "চিংড়ি মাছের বার- বি- কিউ"।
একটি ছোট্ট টিপস :-
দাঁতের ব্যথায় হারবাল চিকিৎসা :-
সূচনা :- এখনকার সময়ে দাঁতের ব্যথা একটি প্রচলিত সমস্যা।এতে দাঁত ও চোয়াল উভয় অংশেই ব্যথা হয়ে থাকে। দাঁতের ক্ষয়, মাড়ির রোগ, সংক্রমণ, অন্যান্য শারীরিক সমস্যা ইত্যাদি বিভিন্ন কারণে দাঁত ব্যথা হয়। দাঁত ব্যথা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। পাশাপাশি ব্যথা কমাতে কিছু ঘরোয়া পদ্ধতি মেনে চলতে পারেন। নিম্নে তা দেওয়া হলো।
১. দাঁত ও মাড়ির রোগের কয়েকটি একক ভেষজ :-
• নিম :- নিমের গুনাগুন আমাদের সকলেরই কমবেশি জানা। নিমের ডাল হলো প্রকৃতির সর্বোৎকৃষ্ট মিসত্তয়াক ব্রাশ। নিয়মিত নিমের মেসত্তয়াক দ্বারা দাঁত মাজলে দাঁত ও মাড়ি উভয়ই সুস্থ ও ভালো থাকে। এরসঙ্গে রক্ষা পায় বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া আক্রমণ থেকে।আর যদি চার পাঁচটি নিম পাতা জলে সেদ্ধ করে, সেই জলে এক চিমটে লবণ দিয়ে প্রতিরাতে ঘুমানোর আগে যদি কুলকুচি করার অভ্যাস করলে আপনার দাঁত ও মাড়ি থাকবে চিরকালের মতো সুস্থ ও সবল। এছাড়াও নিম চর্ম রোগের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভেষজ। নিমের যতই গুনাগুন করাই হোক না কেন,তা বোধহয় কম হয়ে যাবে।এক কথায় বলা চলে নিম সর্বগুণ সম্পন্ন।
• পেয়ারার পাতা :- দাঁতের ব্যথায় পেয়ারা পাতা দারুন একটি ওষুধ হিসেবে কাজ করে। মাড়ির রোগেও পেয়ারার পাতা অনেকক্ষানি উপশম দেয়। যদি কিছু পেয়ারার পাতা ফুটন্ত গরম জলে দিয়ে সেদ্ধ মতো করে নিন, আর তার সঙ্গে সেই জলে এক চিমটে নুন দিয়ে দিন। এবারে এই জলটি কিছুটা ঠাণ্ডা হয়ে এলে (মুখে যতটা সহ্য হয়) কুলকুচি করলে দাঁতের ব্যথায় অনেকক্ষানি আরাম মিলবে।
• লবঙ্গ :- দাঁত ও মাড়ি যত্নে সবচেয়ে ভালো উপাদান হলো এই লবঙ্গ। এটি মুখের দূর্গন্ধ দূর করে।আর সঙ্গে নিঃশ্বাসে সজীবতা আনে। লবঙ্গতে ইউজিনল নামক একটি উপাদান রয়েছে।যা এন্টিসেপটিকের কাজ করে। মুখের ক্ষত, মাড়ির ঘা দূর করতে লবঙ্গের তুলনা হয় না। মাড়ি বা মুখের ক্ষতে লবঙ্গ তেল মাখলে দ্রুত ক্ষত সেরে ওঠে।আর একটু লবঙ্গ মুখে রাখলে মুখের দূর্গন্ধ দূর হয়।এত কিছু গুন রয়েছে এই লবঙ্গের মধ্যে।
• তুলসী :- ঔষধিগুণ সম্পন্ন এই তুলসী।আর এই তুলসীতে রয়েছে এন্টিব্যাক্টেরিয়াল উপাদান। দাঁতের প্লাক থেকে জীবাণুর সংক্রমণ রোধ করতে তুলসী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে সক্ষম। তুলসীর দুটি পাতা মুখে নিয়ে চিবিয়ে খেয়ে নিন। এতে আপনার নিঃশ্বাসের দূর্গন্ধ তো দূর হবেই তার সঙ্গে সঙ্গে আপনার শরীরের পক্ষে ও খুব লাভদায়ক ও মাড়ির সমস্যার ও সমাধান হবে।
২. দাঁতের ব্যথায় ঘরোয়া কিছু সমাধান :-
• লবণ ও গোলমরিচ :- লবণের মধ্যে গোলমরিচ মিশিয়ে ব্যবহার করলে ব্যথা কমতে অনেকটা সাহায্যে করে।এই দুটির মধ্যে আছে ব্যাকটেরিয়ারোধী, প্রদাহরোধী ও অ্যানালজেসিক উপাদান।
• সমপরিমাণ লবণ ও গোলমরিচ নিন।এর মধ্যে কয়েক ফোঁটা জল দিয়ে পেস্ট তৈরি করুন।
• আক্রান্ত দাঁতের সরাসরি পেস্টটি লাগান এবং কয়েক মিনিট রাখুন।
• কয়েকদিন নিয়মিত এটি করুন। দেখবেন ভালো ফল পাবেন।
• রসুন :- দাঁতের ব্যথা কমাতে রসুন একটি ভালো উপাদান। রসুনের মধ্যে রয়েছে অ্যান্টিবায়োটিক,ও ব্যথা কমানোর কার্যকরী উপাদান।
√ রসুনের গুঁড়া নিন অথবা কয়েকটি রসুনের কোয়া থেঁতলে নিন।এর মধ্যে মেশান সামান্য পরিমাণে লবণ।
√ আক্রান্ত দাঁতে সরাসরি মিশ্রণটি লাগান।এতে ব্যথা অনেকটা কমবে। পাশাপাশি কয়েকটি রসুনের কোয়া চিবাতে পারেন।এতে কিছুটা আরাম পাবেন।
√ কয়েকদিন এই পদ্ধতি পালন করুন। দেখবেন অনেকক্ষানি উপকার পাবেন।
• লবণ ও হালকা গরম জল :- এক গ্লাস হালকা গরম জলে আধ চা চামচ লবণ মেশান। এটি দিয়ে কুলি করুন, ফোলা ও প্রদাহ কমাতে কাজ করবে।আর ব্যাকটেরিয়ার সঙ্গে লড়াই করে ব্যথা কমাতে কাজে দেবে।
দাঁতের ব্যথার অন্যতম কারণ হলো ক্যারিজ বা দন্তক্ষয়। অনেকের কাছে এই রোগটি দাঁতের পোকা নামে পরিচিত। যদিও চিকিৎসা বিজ্ঞানে এর কোন ভিত্তি নেই। দাঁতের সব রোগের মধ্যে এটাই সবচেয়ে বেশি হয়। বতর্মানে দাঁত ক্ষয় ও দাঁতের ছিদ্র হত্তয়া একটি সাধারণ সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সাধারণত শিশু,টিনত্রজার ও বয়স্কদের এই সমস্যাটি বেশি হতে দেখা যায়। ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণের ফলেই দাঁত ক্ষয় হয়ে থাকে।ঘন ঘন স্ন্যাকস ও ড্রিঙ্কস খাওয়া, অনেকক্ষণ যাবত দাঁতের মধ্যে খাবার লেগে থাকা,মুখ ড্রাই থাকা, মুখের স্বাস্থ্যবিধি না মানা, পুষ্টির ঘাটতি ইত্যাদি কারণে দাঁতে ছিদ্র ও দাঁত ক্ষয় রোগ হয়ে থাকে।
• এবারে লক্ষণগুলি :- দাঁতে প্রচন্ড ব্যথা হয়, কোন কিছু খাওয়া বা পান করার সময় হালকা থেকে তীব্র ব্যথা হয়, আক্রান্ত দাঁতে গর্ত দেখা যায় এবং দাঁতের উপর সাদা,কালো বা বাদামী দাগ দেখা যায়।
যদি প্রাথমিক পর্যায়ে চিকিৎসা করা না হয় তাহলে ইনফেকশন বৃদ্ধি পেয়ে ব্যথা ক্রমেই অসহনীয় হয়ে উঠতে পারে এবং দাঁত হারানোর সম্ভাবনা ও দেখা দিতে পারে। ক্যাভিটি চিকিৎসায় দাঁতে ফিলিং করা হয় ও ক্যাপ পরানো হয় এবং দাঁতের অবস্থা খুব খারাপ হলে রুট ক্যানেল করা হয়।এই সব চিকিৎসা খুব ব্যায় বহুল এবং কষ্টদায়ক।
৩. সর্বশেষ ঘরোয়া কিছু উপায় দাঁতের ব্যথা কমানো যায়।জেনে নিন সেই উপায় গুলো সম্পর্কে :-
• হলুদ গুঁড়ো :- দাঁতের ছিদ্রের সমস্যায় হলুদ গুঁড়ো ব্যবহার খুবই উপকারী। হলুদে ব্যাকটেরিয়া ধ্বংসকারী উপাদান রয়েছে,যা দাঁতের ব্যাকটেরিয়া ও ইনফেকশনকে ধ্বংস করতে পারে এবং এর প্রদাহ রোধী উপাদান দাঁতের ব্যথা উপশম করতে পারে। হলুদ গুঁড়ো ও জল মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন এবং আস্তে আস্তে ব্যথার দাঁতে লাগান, ব্যথা অনেকটা কমে যাবে।
• লবণ :- লবণে অ্যান্টিসেপটিক ও অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান রয়েছে, যা মুখে ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধি ব্যাহত করে,ও প্রদাহ কমাতে ও ব্যথাকে সহনীয় করতে সক্ষম।
এবার এক গ্লাস হালকা গরম জলে এক টেবিল চামচ লবণ মিশিয়ে মুখে নিয়ে এক মিনিট রাখুন, এবং আক্রান্ত দাঁতের প্রতি মনোযোগ দিন। এভাবে দিনে তিনবার করে করুন ব্যথা কমে যাবে। এছাড়াও এক টেবিল চামচ লবণ অল্প সরিষার তেলের সাথে অথবা লেবুর রসের সাথে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে মাড়িতে ম্যাসাজ করুন কয়েক মিনিট। তারপর কুসুম গরম জল দিয়ে কুলি করে নিন। এভাবে দিনে দুই বার করে, কয়েকদিন করুন, ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস হবে।
এছাড়াও বেকিং সোডা, অ্যালোভেরা, লবঙ্গ, রসুন, পুদিনা,আপেল সিডার ভিনেগার ইত্যাদি ব্যবহার করে ও ব্যাকটেরিয়া ইনফেকশন ও দাঁতের ব্যথা কমানো যায়।
একটি গুরুত্বপূর্ণ কথা, সকালে ও রাত্রে ঘুমানোর ঠিক আগে দাঁত ভালো করে ব্রাশ করুন ও দাঁত ভালো করে পরিষ্কার করুন। এবং সঙ্গে জিহ্বা ও পরিস্কার করুন।
এবারে চলুন আর কথা না বাড়িয়ে আজকের রেসিপিটি জেনে নেওয়া যাক। নিম্নে রেসিপিটি দেওয়া হলো।
ডিসক্লেইমার :- এটি একটি ঘরোয়াভাবে দাঁতের ব্যথা দূর করার একটি উপায়। যদি আপনাদের এটি মনে হয় যে, উপকার পাবেন তাহলে একবার ট্রাই করে দেখতে পারেন। আর আশা করি এটিতে উপকার পাবেন। আর যদি আপনাদের মনে হয় উপকার পাবেন না, তাহলে ডাক্তারের পরামর্শ নিন এবং ডাক্তারের নিয়ম ও কথা মতো মেনে চলুন।
যা যা প্রয়োজন অর্থাৎ উপকরণ :-
১. বড় অথবা মাঝারি সাইজের চিংড়ি মাছ হাফ কেজি
২. আদা বাটা ১/২ চা -চামচ
৩. রসুন বাটা ১/২ চা -চামচ
৪. হলুদ গুঁড়ো ১/২ চা -চামচ
৫. লঙ্কা গুঁড়ো ১/২ চা -চামচ
৬. সয়া সস ২ থেকে ৩ চামচ
৭. বার-বি-কিউ সস ২ থেকে ৩ চামচ
৮. নুন পরিমাণমতো
৯. তেল ভাজার জন্য প্রয়োজনমতো
কি ভাবে রান্না করবেন অর্থাৎ প্রনালীঃ -
প্রথম ধাপ :- প্রথমে ভালো করে চিংড়ি মাছের খোসা ছাড়িয়ে পরিস্কার করে সব উপাদান দিয়ে ১/২ ঘন্টা মশলা মাখিয়ে রেখে দিন। তারপর একটি পাত্র নিন, সেই পাত্রে পরিমাণমতো তেল দিয়ে দিন। তেল গরম হয়ে এলে এক এক করে মেরিনেট করা চিংড়ি মাছ গুলো দিয়ে দিন। কিন্তু চুলার আঁচ মাঝারি থাকবে। আবার এটি কাঠিতে ও গেঁথে ভাজতে পারেন। এবার চিংড়ি মাছ গুলো ভাজা ভাজা হয়ে এলে হালকা করে উপর দিয়ে বার-বি-কিউ সস দিয়ে একটু নেড়ে নিন।
এরপর বার-বি-কিউ এর আসল স্বাদ পাওয়ার জন্য একটি ছোট বাটিতে জ্বলন্ত কয়লা রেখে একটু ঘি দিয়ে দিন। এবার ফ্রাই প্যান ঢাকনা দিয়ে ঢেকে রাখুন।এই সময় চুলার আঁচ একদম কম করে রাখবেন এবং যথাযথ খেয়াল রাখবেন। এবারে কিছুক্ষণ পর চুলা থেকে নামিয়ে ফেলুন, গরম গরম বার-বি-কিউ চিংড়ি রেডি। ধনেপাতা কুচি ওপরে ছড়িয়ে দিতে পারেন (এটা ইচ্ছে হিসেবে দিতে পারেন)। বন্ধুরা কেমন লাগলো জানাতে ভুলবেন না।