আজকে দেখাবো "রুই মাছের দোপেঁয়াজা" কি ভাবে রান্না করবেন?
একটি ছোট্ট টিপস :-
অ্যাসিডিটি থেকে মুক্তি পাওয়ার ঘরোয়া উপায় :-
১. পর্যাপ্ত পরিমাণে জল :- আমরা সকলেই জানি জলের আরেক নাম জীবন।তাই জল ছাড়া মানুষ বাঁচার কথা ভাবাও সম্ভব নয়। আর আমাদের শরীরের গঠনে জন্য জলের বিশাল ভূমিকা রয়েছে। মানুষের শরীর তৈরি ৭০ শতাংশ জল দিয়ে।তাই জলকে অবহেলা করা যাবে না।তাই প্রতিদিন কমপক্ষে ৩ থেকে ৪ লিটার জল পান করা উচিত,এর ফলে কোলন পরিস্কার ও থাকে। এই জল পান করার ফলে মলের সঙ্গে শরীরের জমা ময়লা ও ব্রজ পদার্থ ও বের হয়ে যায়। আপনি পারলে জল খাবার পাশাপাশি ডাবের জল ও পান করতে পারেন। এতে আপনি উপকার পাবেন। তবে কিডনি বা হার্টের অসুখ থাকলে বেশি জল পান করবেন না, অর্থাৎ পরিমাণমতো জল পান করবেন। এক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী জল পান করবেন।
২. ফলমূলের রস:- যদি আপনি কোলোনের ময়লা দূর করতে চান, তাহলে ফলের রস হবে নিয়মিত। অনেক গবেষণায় দেখা গেছে, বিভিন্ন ধরনের ফলের রস খেলে কোলোনের জমে থাকা ময়লা বের হয়ে যায়। আর এটি খাবার হজমে ও সাহায্য করে। তাই নিজের শরীর বা পেট ভালো রাখতে নিয়মিত ফলের রস খান। তবে একটি কথা মাথায় রাখবেন, বাইরে থেকে কেনা কোন জুস বা রস নয়।একেবারে বাড়িতে তৈরি করা টাটকা ফলের রস খেলে উপকারটি পাবেন।
৩. হার্বাল টি বা ওরগ্যনিক ন্যাচারাল টি :- যদি উপকারী পানীয়র তালিকা তৈরি করি তাহলে হার্বাল টি বা ওরগ্যনিক ন্যাচারাল টি এর নাম থাকবে সবচেয়ে উপরের দিকেই। এই জাতীয় সব চা-ই শরীরের পক্ষে উপকারী।এই জাতীয় পানীয় অন্ত্র পরিস্কার রাখতে বেশ কার্যকরী। তাই নিয়মিত এই চা খাওয়ার অভ্যাস করুন।এতে গ্যাস্ট্রিক,বদ হজম, অ্যাসিডিটির মতো সমস্যা দূর হবে নিশ্চিত। প্রাকৃতিক কোন জিনিস খারাপ হয় না, বরং অপ্রাকৃতিক জিনিসই শরীরের পক্ষে ক্ষতিকর।
৪. প্রাকৃতিক খাওয়ার :- প্রাকৃতিক খাওয়ার বলতে এখানে ডাল,আলু,কলা, বিভিন্ন ধরনের শাকসবজি জাতীয় খাবারের কথা বলা হয়েছে।এই জাতীয় খাবারের গুলির মধ্যে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে রেজিস্ট্রেন্স স্টার্চ।আর এই উপাদান পেটকে ভালো রাখতে সাহায্য করে। অনেক গবেষণায় দেখা গেছে,এ ধরনের খাবার নিয়মিত খেলে অন্ত্রে উপকারী ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা বৃদ্ধি পায়।তাই প্রতিদিন তালিকায় আলু,কলা, ডাল ও বিভিন্ন ধরনের শাকসবজি জাতীয় খাবার রাখুন।তবে ডায়াবেটিস থাকলে এই জাতীয় খাবার কম খাওয়াই ভালো।আর এই জাতীয় খাবার খাওয়ার আগে একবার ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে নিতে পারেন।
৫. হাই ফাইবার যুক্ত খাবার :- ফাইবার যুক্ত খাবার নিয়মিত খেলে মিলবে একাধিক উপকার। ডায়াবেটিস, প্রেশার, কোলেস্টেরল সহ বিভিন্ন ক্রনিক রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখতে নিয়মিত ফাইবার যুক্ত খাবার খাওয়া উচিত। শরীর ও পেটের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে ও অত্যন্ত কার্যকরী এই ধরনের খাবার। ফাইবার যুক্ত খাবার নিয়মিত খেলে শরীরের ময়লা পরিষ্কার হয়ে যায়।তাই শাকসবজি, বিভিন্ন ধরনের ফলমূলের মতো ফাইবার যুক্ত খাবার নিয়মিত খাওয়ার অভ্যাস করুন। একটি কথা সবসময় মাথায় রাখবেন যে কোন খাবার পরিমাণমতো মতো খেলে তা শরীরের পক্ষে লাভদায়ক।আর যদি অতিরিক্ত খাবার খান তাহলে শরীরের পক্ষে ক্ষতিকর তাই সবসময় এই কথাটি মাথায় রাখা উচিত।
৬. অ্যাসিডিটি থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য প্রথমত আপনাকে অতিরিক্ত তেল জাতীয় খাবার থেকে দূরে থাকতে হবে,যত পারবেন এড়িয়ে চলুন এই তেল জাতীয় খাবার থেকে। তারপর অতিরিক্ত ঘি, মশলা জাতীয় খাবার থেকে ও দূরে থাকুন।যত পারবেন বাড়ির খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন। বাড়ির খাবার সবচেয়ে বেষ্ট।আর ফাস্টফুড থেকে ও দূরে থাকুন। যতটা পারবেন হালকা খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন,যেটা শরীরের পক্ষে লাভদায়ক। আর যতটা পারবেন জল খাওয়ার চেষ্টা করুন। আর পারলে ফলমূল খান। সঙ্গে একটি সময় নির্ধারণ করে ওয়ার্কআউট করার চেষ্টা করুন।যা আমাদের শরীরের পক্ষে ভালো।আর আমাদের মাথায় রাখা উচিত যে, যতটা ক্যালরি আমরা গ্ৰহন করি, সেই ক্যালরিকে বার্ন করা উচিত যা আমাদের শরীরের পক্ষে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ওপরের উল্লেখিত উপায় গুলি মেনে চললে আশা করা যায় আপনার অ্যাসিডিটি থেকে মুক্তি পেতে অনেকক্ষানি সাহায্য করবে। তাহলে চলুন আর কথা না বাড়িয়ে আজকের "রুই মাছের দোপেঁয়াজা"রেসিপিটি দেখে নেওয়া যাক। আর কেমন লাগলো জানাতে ভুলবেন না।
ডিসক্লেইমার :- ওপরের উল্লেখিত দাবি, পদ্ধতিতে পরামর্শ স্বরূপ। প্রয়োজনীয় চিকিৎসা পদ্ধতি আর ডায়েট ফলো করার জন্য অবশ্যই বিশেষজ্ঞ অথবা চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন অথবা কথা বলুন, সেই নিয়ম মতো মেনে চলুন।
যা যা প্রয়োজন অর্থাৎ উপকরণ :-
১. মাছের জন্য প্রয়োজন,হলুদ গুঁড়ো ১/২ চা -চামচ
২. লঙ্কা গুঁড়ো ১/২ চা -চামচ
৩. নুন ১/২ চা -চামচ
৪. তেল পরিমাণমতো
৫. এবারে রান্নার জন্য প্রয়োজন,রুই মাছ ৪ থেকে ৫ টুকরো (অর্থাৎ পিস করা)
৬. পেঁয়াজ কুচি মাঝারি সাইজের ২ কাপ
৭. রসুন কুচি ১ চা -চামচ
৮. কাঁচা লঙ্কা ২ থেকে ৩ টি (মাঝখান থেকে চিরে নেবেন)
৯. আদা বাটা ১/২ চা -চামচ
১০. রসুন বাটা ১/২ চা -চামচ
১১. হলুদ গুঁড়ো ১/২ চা -চামচ
১২. লঙ্কা গুঁড়ো ১ চা -চামচ
১৩. জিরে গুঁড়ো ১/২ চা -চামচ
১৪. ধনে গুঁড়ো ১/২ চা -চামচ
১৫. টম্যাটো ১ টি
১৬. ধনেপাতা কুচি ১/৪ কাপ
১৭. কুসুম গরম জল ২ কাপের মতো
১৮. নুন পরিমাণমতো
১৯. তেল প্রয়োজনমতো
কি ভাবে রান্না করবেন অর্থাৎ প্রনালীঃ -
প্রথম ধাপ :- প্রথমে মাছ গুলোকে ভালো করে ধুয়ে পরিষ্কার করে, তারপর জল ভালো করে ঝরিয়ে নিন। এরপর দেখুন মাছের গায়ে কোন প্রকার জল না থাকে। এবারে মাছের সাথে ১/২ চা -চামচ নুন,১/২ চা -চামচ হলুদ এবং ১/২ চা -চামচ লঙ্কা গুঁড়ো দিয়ে ভালো করে মেখে নিন। এরপর একটি পাত্র নিন, সেই পাত্রে তেল দিয়ে চুলায় গরম হতে দিন। তেল গরম হলে তাতে মশলা মাখা মাছ দিয়ে দিন। এবার চুলার আঁচ মাঝারি করে দিয়ে মাছের দুই পিঠ লালচে করে ভেজে নিন। এবারে মাছ ভাজা হয়ে গেলে মাছ গুলো আলাদা একটি প্লেটে তুলে রেখে দিন। এবারে এই তেলেই একে একে রসুন কুচি, পেঁয়াজ কুচি এবং কাঁচা লঙ্কা চেরা দিয়ে দিন।
দ্বিতীয় ধাপ :- এরপর দেখুন পেঁয়াজের রঙ হালকা বাদামী হয়ে এলে এর মধ্যে আদা বাটা এবং রসুন বাটা দিয়ে সামান্য জল দিয়ে দিন।সব একসাথে ভালো করে নেড়ে দিয়ে,একে একে হলুদ, লঙ্কা গুঁড়ো, জিরে গুঁড়ো, ধনে গুঁড়ো এবং পরিমাণমতো নুন দিয়ে ভালো করে কষতে থাকুন। এবারে চুলায় আঁচ মাঝারি রেখে মশলায় অল্প অল্প জল দিয়ে কষতে হবে।মোট এককাপ জল অল্প অল্প করে দিয়ে মশলা কষিয়ে নিন। মশলা কষানো হয়ে গেলে মশলার ওপর তেল উঠে গেলে ভাজা মাছ গুলো দিয়ে দিন। তারপর এক মিনিটের পর মাছ সাবধানে উল্টে দিয়ে মাছে বাকি ১/২ কাপ জল দিয়ে পাত্র ঢেকে দিন। মাঝারি আঁচে মাছ ঢেকে ৫ থেকে ৬ মিনিট রান্না করুন যাতে মাছের ভিতর ভালো ভাবে মশলাগুলো ঢুকতে পারে। এবার ৫ থেকে ৬ মিনিট পর পাত্রের ঢাকনা তুলে মাছের ওপর টুকরো করে রাখা টম্যাটো এবং ধনেপাতা কুচি দিয়ে দিন। মাছের ঝোলের ওপর তেল উঠে এলে চুলা বন্ধ করে দিয়ে,মাছ তিন থেকে চার মিনিট ঢেকে রেখে দিন। এরপর পরিবেশন করতে পারেন গরম গরম ভাতের সঙ্গে এই মজাদার "রুই মাছের দোপেঁয়াজা"।